এই সংস্থার বছরে আয় প্রায় ৬০ কোটি ইউয়ান (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯১৩ কোটি টাকার বেশি)। অথচ, ছেলে ঝাং জিলং-এর বয়স ২০ বছর না হওয়া পর্যন্ত তার আসল আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে মিথ্যা বলেছিলেন ঝাং ইউডং।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এমনটাই দাবি করেছেন ইউডং। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর হইচই পড়ে গিয়েছে নেট দুনিয়ায়। সকলেরই প্রশ্ন, কেন ছেলেকে নিজের আসল আর্থিক অবস্থা জানাননি বাবা? জিলং জানিয়েছেন, তার বাবা যে এক বিখ্যাত ব্র্যান্ডের মালিক, তা তিনি জানতেন। তবে, তার বাবা তাকে বলেছিলেন, সংস্থাটি চালু রাখতে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছে তাদের পরিবার। শুধু তাই নয়, একেবারে সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের মতো করেই তাকে বড় করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন জিলং। তিনি জানিয়েছেন, চীনের পিংজিয়াং কাউন্টিতে একটি ছোট ফ্ল্যাটে থাকতেন তারা।
এমনকি, স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রেও তার পরিবার কোনও প্রভাব খাটায়নি। নিজের দক্ষতায় তিনি একটি ভাল স্কুলে ভর্তি হতে পেরেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর, ইউডং একটা স্থায়ী চাকরি পেয়েছিলেন। মাসে বেতন ছিল প্রায় ৬,০০০ ইউয়ান (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯০ হাজার টাকার বেশি)। বেতনের টাকা জমিয়ে ধীরে ধীরে পারিবারিক ঋণ শোধ করতে চেয়েছিলেন।
তবে, এই সময়ই তার বাবা ফাঁস করেছিলেন, গত ২০ বছর ধরে তিনি তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা নিয়ে জিলংকে মিথ্যা বলে এসেছেন। তাদের পরিবারের মাথায় কোনও ঋণের বোঝা নেই। তারা আসলে অত্যন্ত ধনী এক পরিবার। এরপরই, জিলংকে নিয়ে তার পরিবার, পিংজিয়াং ছোট ফ্ল্যাটটি থেকে এক নতুন তৈরি ভিলায় উঠে গিয়েছিলেন। যে ভিলার দাম ছিল ১ কোটি ইউয়ান (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৫কোটি টাকার বেশি)। এরপর, ঝাং জিলং তার বাবার সংস্থার ই-কমার্স বিভাগে কাজ করা শুরু করেন। বর্তমানে, তিনি এই সংস্থাকে আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করার চেষ্টা করছেন।
কেন তার বাবা ২০ বছর ধরে মিথ্যা বলেছিলেন? জিলংয়ের দাবি, যাতে তিনি সাফল্য অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন, তার জন্যই তার বাবা এই পথের আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখনও অবশ্য ইউডংয়ের পরীক্ষা শেষ হয়নি। তার বাবা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রে ভাল কাজ করে ছেলে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে, তবেই, তিনি সংস্থার মালিকানা তুলে দেবেন ছেলের হাতে।
এই কাহিনি নেটিজেনদের মধ্যে সাড়া পেলে দিয়েছে। অনেকেই এই কাহিনি বিশ্বাস করতে চাননি। তারা বলছেন, এটা একেবারে ‘রূপকথার গল্প।’ এটা বাস্তবে কখনও হতে পারে না। তবে, চীনের কিছু মানুষ মনে করছেন এই কাহিনি অবিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই। কারণ ঝাং ইউডংয়ের এই সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই চিনে প্রতিষ্ঠিত সংস্থা হলেও, গত দু-এক বছর ধরেই বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেছে। সম্ভবত, ছেলে স্নাতক হওয়ার পর, বাবার আর পারিবারিক ব্যবসার আসল অবস্থা গোপন রাখার প্রয়োজন পড়েনি। আর তাই, এত বছর পর বিজ্ঞাপন দেয়া শুরু করেছে সংস্থাটি।