স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ফারুক–উজ্জামান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, রোজিনা আক্তার ও নুরুল ইসলাম দম্পতির তিন মেয়ে। সবচেয়ে ছোট ইসরাত। তবে সুলতানের সঙ্গে রোজিনার সম্পর্ক ছিল। রোজিনার সঙ্গে পরিকল্পনা করে সুলতান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইসরাতকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, রোজিনা ২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি নুরুল ইসলামকে মুঠোফোনে জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁদের মেয়ে ইসরাত হারিয়ে গেছে। খবর পেয়ে নুরুল ঢাকা মেডিকেলে যান। সেখানে গিয়ে গাইনি ওয়ার্ডে স্ত্রী রোজিনাকে দেখতে পান তিনি। তখন রোজিনার হাতে ইসরাতের প্যান্ট ও এক জোড়া স্যান্ডেল ছিল।
পরদিন ৪ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেলের নতুন ভবনের তৃতীয় তলা থেকে ইসরাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশুটির নাকে রক্ত জমাট বেধে ছিল। আর পেটের বাম পাশে ছিল আঘাতের চিহৃ। ময়নাতদন্তের পর ইসরাতকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন নুরুল। থানা–পুলিশের হাতঘুরে মামলার তদন্তভার যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির সহায়তায় ইসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মা রোজিনা ও তাঁর প্রেমিক সুলতানের জড়িত থাকার তথ্য পায় ডিবি। দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সুলতান পেশায় দরজি। আর রোজিনা গৃহিনী। প্রেম করলেও বাচ্চা থাকায় রোজিনাকে বিয়ে করতে রাজি ছিলেন না সুলতান। সুলতান স্বীকারোক্তিতে বলেন, ‘রোজিনা আমাকে বিয়ের কথা বলতো। আমি বলি, বাচ্চাকাচ্চাসহ আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না। রোজিনা তখন বলল, বাচ্চা ছাড়া আমি বিয়ে করব কি না? একপর্যায়ে রাজি হই।’